Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি আশ্চর্যজনক উপায়ে

 

বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি আশ্চর্যজনক উপায়ে
চিত্রঃ ড্রাগন ফলের চারা

বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি এটা অনেকের কাছে কঠিন পদ্ধতি মনে হলেও বর্তমানে এটা খুবই সহজ। আধুনিক টেকনোলজির যুগে বীজ থেকে চারা উৎপাদন এখন অনেক সহজতর হয়েছে।


ড্রাগন ফল বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় একটি রসালো ফল। এই ফল দেখতে যতটা সুন্দর তার চেয়েও অনেক বেশি টেস্ট। ড্রাগন ফলের চাষ করে বর্তমানে অনেক বেকাররা সফল হচ্ছেন।


 ড্রাগন ফলের চারা উৎপাদন খুবই সহজ এবং অনেক লাভজনক। ড্রাগন ফল এমন একটি ফল বিশ্বের সকল দেশে কম বেশি পাওয়া যায় এবং এই ফলের চাহিদা বর্তমান সময়ে অনেক বেশি। বেশিরভাগ লোকেরই এই ফলটি খেয়ে থাকে তাদের রোগ সমস্যার কারণে।


 তাছাড়া এই ফলটি অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। আমাদের দেশে অনেক ফল উৎপাদন হয় তাছাড়া বাহিরের দেশে থেকেও অনেক ড্রাগন ফলে দেশে আমদানি করা হয়। ড্রাগন ফল থেকে কিভাবে চারা উৎপাদন করবেন এবং নিজে কিভাবে সফল হবেন।


মাত্র ৭দিনে বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি

ড্রাগন ফলের ভেতরে ছোট ছোট অসংখ্য বীজ থাকে যার মাধ্যমে খুব সহজে চারা উৎপাদন করা সম্ভব। আপনি একটি ড্রাগন ফল দিয়ে হাজারো চারা তৈরি করতে পারবেন। 


এতে করে আপনি ড্রাগন ফলের চাষ করতে পারেন কিংবা চারা উৎপাদন করে সেই চারা বিক্রয় করে অধিক লাভবান হতে পারেন। বর্তমান সময়ে ড্রাগন ফলের চারার দাম অনেক বেশি এবং জনপ্রিয় একটি উদ্ভিদ।


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরির পোস্টটিতে এমন কিছু সহজ উপায়ে দেখাবো যার মাধ্যমে আপনি ড্রাগন ফলের বীজ থেকে মাত্র ৭ দিনে চারা তৈরী করতে পারবেন। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে খুব কম সময়ের মধ্যে অধিক ড্রাগন ফলের চারা উৎপাদন করা সম্ভব।


কেনো বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি করবেন

বর্তমান সময়ে ফলের বীজ এর চেয়েও কান্ড দিয়ে চারা তৈরি করার পদ্ধতি অনেক সহজ এবং লাভজনক। তাছাড়া ফল গাছের কান্ড দিয়ে চারা তৈরি করা হলে সেই ছাড়াই খুব তাড়াতাড়ি ফলন হয়।


আমাদের দেশে ড্রাগন ফলের কান্ড বা গাছ সকল জায়গায় পাওয়া যায় না। তাই আপনি যদি ড্রাগন ফলের চাষ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে বীজ থেকেই চারা তৈরি করুন। তাছাড়া অনেক  ড্রাগন ফলের চারা তৈরীর জন্য অনেক কান্ড প্রয়োজন যা আপনার জোগাড় করা সম্ভব নয়।


আপনি অনেকগুলো ড্রাগন গাছের ডাল বা কান্ড ছাড়া একটি ড্রাগন ফল দিয়েই হাজারো চারা তৈরি করতে পারেন। এর ফলে আপনি খুবই কম খরচে অধিক গাছের চারা তৈরি করতে সক্ষম হবেন। তাছাড়া বাণিজ্যিকভাবে সেগুলো চাষ করতে পারবেন অথবা সেগুলো বিক্রি করতে পারবেন।


আপনি যদি নিজ উদ্যোগে একটি ড্রাগন ফলের বীজ থেকে অধিক পরিমাণ চারা তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনার নিজের মনের একটা আনন্দ হবে।  তাছাড়া নিজের মনে এমন একটা ভালো লাগা কাজ করবে যে সাক্সেস বিষয়টি প্রকাশ পাবে।

আরো দেখুনঃ

>লেবু পাতা থেকে জন্ম নিবে লেবু গাছের চারা


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি পদ্ধতি

প্রথমে একটি তাজা ড্রাগন ফল ড্রাগন ফল দিয়ে ভাল করে কেটে এবং খোসা গুলো ফেলে দিন। তারপর ড্রাগন ফল হাতে নিয়ে হাত দিয়ে থেঁতলে নিন। তারপরে একটি ছাকনি নিয়ে তাতে ড্রাগন ফলের বীজ গুলো রেখে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। 


এমন এমন ভাবে ধুয়ে নিন যাতে করে বীজগুলো ছাকনির ভিতর থেকে যায় এবং ড্রাগন ফলের অংশটুকু চলে যায়। ভালো করে ধোয়ার পর বীজগুলো শুকিয়ে নিন।


ড্রাগন ফলের বীজগুলো একটি পাত্রে নিন বীজগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখুন যাতে একটি বীজের গায়ে অন্যটি লেগে না থাকে।  কয়েকটি টিস্যু পেপার নিন যেগুলো আমরা ব্যবহার করে থাকি। টিস্যু পেপার একটি বাটির ভিতরে ভিতরে নিয়ে সুন্দর করে বিছিয়ে দিন।



ড্রাগন ফলের বীজ গুলো সুন্দর মত টিস্যুর উপরে রাখুন।  বীজগুলো এমনভাবে রাখুন যেন একটির গায়ে অন্যটি লেগে না থাকে অর্থাৎ বীজগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখুন।


একটি বীজের সাথে অন্য বীজ লেগে থাকলে যখন চারা একটু বড় হবে তখন একটি চারা সাথে অন্য চারার  শিকড় পেচিয়ে যাবে। তাই আগে থেকেই সতর্কভাবে একটি বীজ থেকে অপর বীজের দূরত্ব রাখুন।


বীজগুলো রাখা হয়ে গেলে টিস্যু সুন্দর মত ভাঁজ করে ফেলুন অর্থাৎ টিস্যুর ভিতরে বীজগুলো সুন্দর মত করে বিছিয়ে রাখুন। বীজ ঢাকার ক্ষেত্রে পরিমাণমতো টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন।


এখন টিস্যুর উপরে হাত দিয়ে অথবা কোন স্প্রে দিয়ে আস্তে আস্তে কিছুক্ষণ পানি ঢালুন। যতক্ষণ না পর্যন্ত টিস্যু পুরো ভিজে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত পানি ঢালুন। অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না তাহলে বীজ পচেঁ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।


এখন পাত্রটি ঢেকে দিয়ে হালকা রোদ যুক্ত স্থানে রেখে দিন। মাত্র 7 দিন পরে পাত্রটিতে দেখতে পারবেন প্রতিটা ড্রাগন ফলের বীজ ফেটে চারা বেড় হয়েছে কিংবা জার্মিনেশন হয়েছে। 


টিস্যুর মধ্যে পেঁচিয়ে রাখলে এত সুন্দর জার্মিনেশন হয় আপনি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। তবে অবশ্যই পাত্রটি ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে।


এখন টিস্যু থেকে আস্তে আস্তে বা সতর্কতার সাথে ছোট চারা গুলো তুলে নিন। অনেকগুলো ছোট ছোট টপ নিয়ে প্রতিটা টবে চার-পাঁচটি করে চারা রোপন করে দিন। তবে অবশ্যই সতর্কতার সাথে চারা রোপন করবেন যেন ভেঙে না যায়।


 একটি টবে চার-পাঁচটি করে চারা রোপন করার প্রধান কারণ হলো ১/২ টি মারা গেল যাতে অন্তত একটি চারা থাকে। এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করতে পারলে মাত্র এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অনেকটাই বড় হয়ে যাবে এবং পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনার তৈরীকৃত চারা গাছে ফল ধরবে।


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরী হয়ে গেলে যখন রোপন করবেন তখন বেশি পানি দিবেন না। বেশি পানি দিলে ছোট চারার গোড়া পচেঁ যেতে পারে। নিয়মিত যত্ন করুন এবং পানি দিন তাহলে খুব শীঘ্রই ড্রাগন ফলের চারা গাছ বড় হতে শুরু করবে।


সতর্কতাঃ

১. বীজগুলো ধোয়ার সময় সতর্কতার সাথে কাজ করবেন যাতে করে বীজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

২. বীজগুলো টিস্যু দিয়ে ঢেকে দেওয়ার সময় অতিরিক্ত পানি দেওয়া উচিত হবে না। এমন ভাবে পানি দিবেন যাতে করে পাঁচ ছয় দিনে পানি শুকিয়ে যায়।

৩. পাত্রটি খুব ভাল করে ঢেকে রাখুন এতে করে জার্মিনেশন ভালো হবে।

৪. ছোট ছোট চারা খুব যত্ন সহকারে ছোট ছোট পাত্রে রোপণ করুন। খুব আলতো করে ধরুন যেনো চারাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরির উপকারিতা

১. খুব কম সময়ে কোন খরচ ছাড়া অধিক পরিমাণ চারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়।

২. অধিক চারা উৎপাদন করে ড্রাগন চাষ করা যায় কিংবা ড্রাগন ফলের চারা বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

৩. এই পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের চারা উৎপাদন করলে পরিশ্রম অনেক কম লাগে। তাছাড়া অধিক পরিমাণ ড্রাগন ফলের গাছের কান্ডের প্রয়োজন হয় না।


আপনি যদি ড্রাগন ফলের চাষ করতে চান অথবা ড্রাগন ফলের চারা বিক্রি করতে চান তাহলে ড্রাগন ফলের বীজ থেকে চারা তৈরি করতে পারেন। এতে করে আপনার কম সময়ে অনেক চারা তৈরি করা সম্ভব হবে।


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি সমস্যাজনক দিক হল এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করলে ফলন হতে অধিক সময়ের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ড্রাগন ফলের চারা গাছ বড় হতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। 


আপনি যদি বাড়ির আশেপাশে রোপন করার জন্য দুই একটা ড্রাগন ফলের চারা প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই ড্রাগন গাছের কান্ড দিয়ে চারা তৈরি করুন। এতে করে  ড্রাগন গাছের ফলন খুব শীঘ্রই পাবেন।


বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি প্রক্রিয়া আরো অনেক রকমের রয়েছে তবে এই পদ্ধতিটি অনেক ভালো এবং পরিশ্রমহীন। আপনি নিজ বাড়িতে বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।

টিস্যু পেপার দিয়ে আপেল গাছের চারা তৈরি