অবিশ্বাস্য উপায়ে মরিচ গাছের চারা তৈরি
![]() |
চিত্রঃ মরিচ গাছের চারা |
বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি অনেকে ঝামেলা মনে করলেও এটি অনেক সহজ চাষাবাদ পদ্ধতি। আধুনিক চাষাবাদ টেকনোলজির দিক থেকে খুব সহজেই চারা গাছ তৈরি করা সম্ভব। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে যেকোনো বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ ও বংশবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব।
বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি করা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। আপনি অল্প পরিশ্রম করে অল্প খরচে অনেক মরিচ গাছের চারা তৈরি করতে পারেন। পরবর্তীতে সকল প্রজাতির মরিচের চারা বিক্রি করে অনেক লাভবান হতে পারেন।
মরিচ গাছের বীজ সংগ্রহ থেকে শুরু করে চারা তৈরির পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপের মধ্য দিয়ে যায়। তাছাড়া মরিচ গাছের জন্য কি মাটি বেশি কার্যকরী কিংবা কিভাবে ভাল ফলন দেয় সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান থাকা অবশ্যই উচিত।
বেশিরভাগ মানুষ বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরী করতে পারে না কিছু না জানার অভাবে। আপনি যদি সঠিক নিয়ম জেনে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন তাহলে প্রতিটা বীজ সফলভাবে চারা তৈরী করতে পারবেন। আপনি এই ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন।
মরিচ গাছের চারা ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি
কৃষিনির্ভর দেশগুলোর জন্য মরিচের চারা তৈরি করা কিংবা মরিচ চাষ করা অনেক সহজ একটি ব্যাপার। অনেক দেশেই রয়েছে যে সকল দেশে ফসল উৎপাদন হয় না। সে সকল দেশের জন্য এসব ফলের গাছ এর চারা তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য।
এমন কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে এগুলোর মাধ্যমে যেকোনো মাটি থেকে যে কোন উদ্ভিদের চারা তৈরি করা সম্ভব। সঠিক নিয়ম সঠিকভাবে পালন করতে পারলে যে কোন উদ্ভিদের চারা তৈরি করা সম্ভব হবে।
এমন একটি সহজ পদ্ধতি হলো মরিচ গাছের চারা তৈরি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ তবে বর্তমানে কিছু ডিজিটাল আধুনিক রূপ নিয়ে আরো সহজ হয়ে গিয়েছে।
তেমনি একটি সহজ পদ্ধতি আলোচনা করবো যার ফলে আপনারা খুব সহজে বীজ থেকে যেকোনো মরিচের চারা তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়া এই পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করতে পারলে নতুন অনেক অভিজ্ঞতা হবে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে মরিচ গাছের চারা তৈরি
এই পৃথিবীতে মরিচের অনেকগুলো প্রজাতি রয়েছে যেগুলো আমরা অনেকেই জানিনা। তবে নাগা মরিচ যেটা বিশ্বের সবচাইতে ঝাল মরিচ এর মধ্যে অন্যতম। আপনি চাইলে এই মরিচের চারা ও খুব সহজে তৈরি করতে পারেন।
নাগা মরিচ বলতে আমাদের দেশের বোম্বাই মরিচ কে বুঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে এই মরিচকে বোম্বাই মরিচ হিসেবেই চিনে থাকি। অন্যান্য দেশে এই মরিচকে নাগা মরিচ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
আমাদের দেশে পরিপ্রেক্ষিতে যে কোন প্রজাতি চাষ করতে পারবেন। আমাদের দেশের কৃষিনির্ভর দেশ এখানকার মাটি এসকল মরিচ চাষের জন্য অনেক সুবিধাজনক। এশিয়ার অনেক দেশে নাগা মরিচের প্রচুর চাষাবাদ করা হয়।
তাছাড়া অন্যান্য যেকোনো মরিচের চাষ খুব সহজেই নিজ বাড়ির আশেপাশে করতে পারবেন। এর ফলে একদিকে যেমন আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন অন্যদিকে আপনি এসকল মরিচের চারা বিক্রি করতে পারবেন।
আজকে আপনাদের বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি পদ্ধতি টি শেখানোর চেষ্টা করব। এটা শিখে আপনারা বাস্তব জীবনে ব্যবহার করতে পারবেন এবং খুব সহজে আপনিও নিজ বাড়িতে বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
>বীজ থেকে ড্রাগন ফলের চারা তৈরি
>পাতা থেকে লেবু গাছের চারা তৈরি
মরিচ গাছের চারা তৈরি করার জন্য বীজ সংগ্রহ
বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি প্রক্রিয়া
প্রথমে ছোট ছোট কয়েকটি পাত্র নিতে হবে আপনি চাইলে প্লাস্টিক বা পলিথিনের ছোট ছোট পাত্র নিতে পারেন। পাত্র গুলোর নিচে দিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেকগুলো ছিদ্র করে দেন। ছিদ্র করা হয়ে গেলে পাত্র টির ভিতরে মাটির ঢালুন।
অবশ্যই মরিচ চাষের জন্য হালকা মাটি ব্যবহার করবেন। কিছু ঝুর ঝরে মাটি এবং গোবর সার বা বিভিন্ন জৈব সার হালকা পরিমাণে মাটি তৈরি করে নিতে পারেন। তবে মাটিগুলো যেন খুব হালকা হয়।
মাটি ভারী হয়ে গেলে মরিচের বীজ থেকে চারা বের হতে নাও পারে। হালকা মাটি হলে খুব সহজেই মাটি ভেদ করে মরিচের বীজ গুলো উপর দিকে চলে আসবে। মরিচের চারা তৈরি করার জন্য আপনি যদি একটি টব ব্যবহার করেন তাহলে অনেক ভালো হয়।
অনেকেই মাঠে বীজ শেড তৈরি করে মরিচের চারা তৈরি করে। এক্ষেত্রে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় এবং অনেক মরিচের চারা বড় হয় না। কেননা মাঠের মাটি গুলো ভারী থাকে।
আপনি যদি নিজে মাটি তৈরি করে নিতে পারেন এবং টবে মরিচের চারা তৈরী করে পরবর্তীতে সেগুলো অন্য জায়গায় সহজে প্রতিস্থাপন করতে পারেন।
মরিচ গাছের চারা তৈরি করার জন্য ছোট টব ব্যবহার করেন তাহলে পরবর্তীতে খুব সহজেই প্রতিস্থাপন করে আপনার পছন্দের জায়গায় রোপণ করতে পারবেন।
এখন পাত্রটির চার ভাগের তিন ভাগ মাটি দিয়ে পূর্ণ করুন। তারপর ছোট ছোট কয়েকটি গর্ত করুন। মরিচের বীজ গুলো তিন-চারটে করে প্রতিটা পাত্রে দিয়ে দিন।
পাত্রটি উপরে ঝুর ঝরে মাটি দিয়ে হালকা করে চেপে দিন। তারপরে পরিমাণমতো পানি দিন অবশ্যই স্প্রে বোতলের পানি ব্যবহার করবেন। কেননা যে কোন পাত্র দিয়ে পানি দিতে গেলে অতিরিক্ত পানি পড়ে যেতে পারে।
মরিচ গাছ লাগানোর নিয়ম
এরপরে পাত্রটি ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিন সাতদিন পরে দেখবেন প্রতিটা বীজ থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নিয়েছে। এর পরে আপনি প্রতিদিন পরিমাণমতো পানি দিন এবং যত্ন নিন।
১৫ থেকে ২০ দিন পরে দেখবেন যে চারা গুলো অনেক বড় হয়েছে। এর পরে আপনি চারাগুলো অন্য কোন স্থানে প্রতিস্থাপন করার জন্য তৈরি করতে পারেন। পরবর্তীতে আপনি কোন জমিতে অথবা আপনার বাড়ির আশেপাশে কোন টবে রোপণ করতে পারেন।
আপনি যদি মরিচ গাছের চারা বিক্রি করতে চান তাহলে ছোট ছোট কিছু পলি ব্যাগের পাত্র তৈরি করে সেখানে মরিচের চারা স্থানান্তরিত করতে পারেন। পরবর্তী কোন টবে স্থানান্তরিত করার আগে সেখানকার মাটি আগে থেকে প্রস্তুত করে রাখতে হবে।
একটি পাত্রে তিন থেকে চারটি বীজ রোপন করার পরে দেখতে পারবেন কোন চারা অনেক বড় এবং অন্য কোন চারা ছোট রয়ে যাবে। যে সকল টবে ছোট চারা গুলো থাকবে সেগুলো ফেলে দিবেন।
যেগুলো বড় থাকবে বুঝবেন যে সেগুলো সব সুস্থ চারা। যেগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট থাকবে সেগুলো হলো অসুস্থ রোগাক্রান্ত চারা। তাই সেগুলো ফেলে দিন কারণ এগুলো থেকে ফল আসতে অনেক সময় লাগতে পারে।
>টিস্যু পেপার দিয়ে কমলা ও মাল্টা গাছের চারা তৈরী
>টিস্যু পেপার দিয়ে আপেল গাছের চারা তৈরি
জৈব সার যুক্ত ভালো মাটি তৈরি করুন। কম সময়ে অধিক ফলন পেতে ভালো মাটি প্রস্তুত করে রাখতে হবে। পরবর্তী সময়ে স্থানান্তরিত করার পরে রোদে রাখতে পারেন।
টবে মরিচ চাষ পদ্ধতি
ডিজিটাল পদ্ধতিতে বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করে অনেক লাভবান হতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে মরিচ গাছের চারা তৈরিতে কোন খরচ নেই কম পরিশ্রমে আপনি অনেক চারা তৈরি করতে পারবেন।
বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি করার কিছু সমস্যা জনিত দিকে থাকে সেটা হলো এই মরিচ গাছ থেকে ভালো ফলন পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। মরিচের চারা থাকা অবস্থায় দুটি সঠিক পরিচর্যা করতে পারেন তাহলে ভালো ফলন পেতে দুই থেকে তিন মাস লাগতে পারে।
মরিচ গাছের কলম বা ডাল থেকে মরিচের চারা তৈরি করা সম্ভব হয় না। তাই তাই বীজ থেকে মরিচ গাছের চারা তৈরি করার এটাই অনেক ভাল পদ্ধতি। তাছাড়া এই পদ্ধতিতে অনেকগুলো মরিচ গাছের চারা তৈরি করে চাষাবাদ করা সম্ভব হয়।