Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি বাংলাদেশের বেস্ট স্পট

বাংলাদেশের তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি স্পট
চিত্রঃ তারুয়া সমুদ্র সৈকত


অপরূপ মায়াবি সৌন্দর্যে সেজে আছে বাংলাদেশের ভোলা জেলার চর কুকরি মুকরি দ্বীপ এবং ঢাল চড়ের তারুয়া সমুদ্র সৈকত। তারুয়া সমুদ্র সৈকত
তারুয়াতারুয়া বর্তমানে বাংলাদেশের নৈসর্গিক প্রকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত স্থান যেখানে এক সাথে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ সহ ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের দেখা মিলে। ভোলা জেলার মূল শহর থেকে ৮০/৯০ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত তাড়ুয়া সমুদ্র সৈকত। 


তারুয়া সমুদ্র সৈকতে দেখা মিলে ২০০/২৫০ প্রজাতির প্রানি তার ভিতরে হরিণ এবং লাল কাকড়া অন্যতম। ভোলার মূল ভূখণ্ড থেকে ভিন্ন দুটি দ্বীপ চর কুকরি মুকরি এবং তারুয়া সমুদ্র সৈকত। তারুয়া সমুদ্র সৈকতের আরেক নাম হলো ঢালচর। 


স্বর্গীয় সৌন্দর্য ঘেরা তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি  

এই দ্বীপটি রয়েছে ভোলার দক্ষিনে যার পরে আর কোনো দ্বীপ নেই। এই দ্বীপটির এক পাশে রয়েছে মেঘনা নদী এবং অপর পাশে বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর যার উত্তাল লোনা পানির ঢেউ আপনাকে মুগ্ধ করে দিবে। 


আজকে এই দ্বীপের সম্পর্কে অনেক কিছুর ধারণা দিবো কিভাবো আসবেন এখানে কি কি রয়েছে সকল কিছু। 


>ভোলার ইলিশ মাছ ও মহিষের দুধের টক দই


  তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি যাওয়ার পূর্ণ গাইডলাইন এবং আমাদের ঘুরে আসা ভ্রমন কাহিনী নিয়ে পোষ্টের শেষে লিংক দেয়া আছে 


বাংলাদেশের বৃহত্তম ব-দ্বীপ ভোলা জেলা যার পূর্বের নাম শাহবাজপুর। ভোলা জেলার মূল শহর থেকে সোজা চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার দুটি ছোটো দ্বীপ চর কুকরি মুকরি এবং ঢাল চর - তারুয়া সমুদ্র সৈকত।  


এক সময় এই দ্বীপে গড়ু মহিষ চড়াতো কিন্তু আস্তে আস্তে এই দ্বীপে এখন মানুষ থাকা শুরু করেছে। চরফ্যাশন উপজেরার দক্ষিন আইচা থানার কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে  যেতে খুব একটা সময় লাগে না।


বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি পর্যটন স্পট। Two Amazing Tourist Spot in BD.
চিত্রঃ তারুয়া সমুদ্র সৈকত


বাংলার শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্পট তারুয়া সমুদ্র সৈকত

আপনি যদি এডভেঞ্চার প্রেমী হন তাহলে তারুয়া সমুদ্র সৈকত আপনার জন্য পারফেক্ট একটি জায়গা। এই দ্বীপের সমুদ্রের ঢেউ ম্যানগ্রোভ বন এবং ৭০০০ এর বেশি বড়ই গাছের বাগান আপনার মন কেড়ে নিবে। 


কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে স্পিডবোটে এই সৈকতে আসতে ১ ঘন্টার মত সময় লাগে তবে আসার সময় আপনি চর কুকরি মুকরির সৌন্দর্য দেখতে পারবেন। অনেকেই চর কুকরি মুকরি আসে কিন্তু তারা জানে না চর কুকরি মুকরির চেয়েও নৈসর্গিক সুন্দর জায়গা তারুয়া সমুদ্র সৈকতে রয়েছে


 আপনি যদি চর কুকরিতে যান আর তার পাশের দ্বীপ তারুয়া না দেখেন তাহলে বলবো আপনি আসল সৌন্দর্য মিস করেছেন। 


এই দ্বীপে আপনি গেলে ২/৩ দিনের সময় নিয়ে যান তাহলে সকল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে তারুয়া সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা খুব বেশি।  


প্রতিদিনই এখানে পর্যটকদের ভির জমছে  এই অঞ্চলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। তাছাড়া এই সমুদ্র সৈকতে রাত জাপন করার জন্য রয়েছে দুটি টিনের গেস্ট হাউজ। 


তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেক মানুষ ক্যাম্প করে রাত যাপন করে। আপনি একবার ভাবুন সমুদ্র সৈকতের পাশে ক্যাম্প করে থাকাটা সত্যিই মজার। 


তারুয়া দ্বীপে রাত যাপনের প্রধান মজা হচ্ছে রাতে সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ। রাতের বেলা নিরিবিলি নিঝুম পরিবেশে সমুদ্রের ঢেউ এবং বিভিন্ন প্রনীর শব্দ আপনাকে পাগল করে তুলবে।  আপনি যদি এই দ্বীপে এসে রাত জাপন না করেন তাহলে অনেক সৌন্দর্য মিস করবেন। 



তারুয়া সমুদ্র সৈকতের বীচে গেলে সব সৌন্দর্য দেখে আপনার মন ভরে যাবে। বীচে রয়েছে রেস্ট টেবিল যেখানে শুয়ে শুয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। 


এখানকার বীচের রেস্ট টেবিলে থাকতে হলে আপনাকে টাকা গুনকে হবে না কারন এই দ্বীপে বসতি একে বারে কম।  নিরিবিলি জনহীন পরিবেশে আপনার বেশ ভালো লাগবে। 



এই দ্বীপের আসল নাম হলো ঢাল চর যার অপর নাম তারুয়া সমুদ্র সৈকত। দ্বিপে রয়েছে প্রায় ৭০০০ এর বেশি বড়ই গাছ যেগুলো বালির ওপরে প্রাকৃতিক ভাবেই হয়েছে। 


মূল স্পটে খুব বেশি একটা বসতি নেই তবে এখানকার পরিবেশ আপনার জন্য নিরাপদ। সমুদ্র সৈকতটির থেকে ৫/৬ কিলোমিটার দূরে যায়গার নাম ঢালচর যেখানে অনেক মানুষের বসবাস।


এটি সমুদ্রের পাশে হওয়াতে নিরাপদে থাকার জন্য বেশির ভাগ মানুষ দূরে বাড়ি তৈরি করে থাকছে। তাছাড়া দিনের বেলা সমুদ্রের পারে এখানকার মানুষের খুচি জাল দিয়ে মাছ ধরা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

 

তারুয়া সমুদ্র সৈকতে ১/২ দিনের জন্য থাকতে হলে সাথে বাজার করে নিয়ে আসতে হবে কারণ এখানে কোনো বাজার নেই। আপনার বাজার করতে হলে ৫/৬ কিলোমিটার জঙ্গল পারি দিয়ে বাজার করে নিয়ে আসতে হবে যা আপনার জন্য খুব বেশি কষ্টের। তবে এখানে গেস্ট হাউজের সামনে ২/৩ টি টঙের দোকান রয়েছে যেগুলো শুধুমাত্র পর্যটক আসলেই খোলা হয়। 


বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি পর্যটন স্পট। Two Amazing Tourist Spot in BD.
চিত্রঃ তারুয়া সমুদ্র সৈকত


তাছাড়া বিদ্যুৎ নেই এখানে তবে নতুন সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এই দ্বীপে বিদ্যুৎ নেয়ার কাজ চলছে। রাতের বেলা এি দ্বীপের প্রধান আলো হলো সৌরবিদ্যুতের আলো তাছাড়া গেস্ট হাউজে থাকলে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। 

আরো দেখুনঃ


তারুয়া সমুদ্র সৈকতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যা আপনার উপকারে আসবে। 


১/ এই দ্বীপে জনমানুষ খুবই কম মোট কথা বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ যেখানে আপনি চাইলেও অনেক কিছু পাবেন না। 

২/ এই সৈকতে আসতে হলে আপনার সকল প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে তবে ১ দিনের জন্য  আসতে হলে এখানে না আসাই ভালো। ১/২ দিন থাকলে আপনি সকল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। 


৩/ তারুয়া সমুদ্র সৈকত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হলেও এই যায়গাটি সম্পূর্ণ নিরাপদ তাই আপনি আপনার পরিবার সহ আসতে পারেন। 


৪/ এখানে আসলে খাবার সাথে করে নিয়ে আসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

৫/ বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না কারণ এখানে সৌরবিদ্যুৎ রয়েছে।


৬/ এখানকার বীচের লাল কাকঁড়া ধরবেন না এবং বন্য প্রণীর ক্ষতি করবেন না যা কতৃপক্ষের সম্পূর্ণ নিষেধ রয়েছে। 

৭/ এই সৈকতের মানুষজন খুবই সহজ সরল তাই যেকোনো সাহায্য তাদের কাছে পাবেন।


৮/ এই দ্বীপে যাওয়ার প্রধান সময় হচ্ছে শীত কাল এবং গরম কালে, বর্ষা কালে এখানে আসা খুবই বিপদজনক। 

৯/ তারুয়া সমুদ্র সৈকতে আপনি নিরাপদে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন কেউ আপনাকে বিরক্ত করতে পারবে না।


১০/ এই সৈকতে আপনি এক সাথে সি বীচ সহ ম্যানগ্রোভ বন সকল কিছু একসাথে দেখতে পারবেন তাছাড়া এখানকার জন জীবন অপনাকে অনেক ভাবাবে। 


বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি পর্যটন স্পট। Two Amazing Tourist Spot in BD.
চিত্রঃ চরকুকরি মুকরি দ্বীপ


বাংলার শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্পট চরকুকরি মুকরি দ্বীপ

 কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে  চর কুকরি মুকরি যেতে ১.৫ ঘন্টার মত লাগে তবে স্পিডবোটে যেতে ২৫/৩০ মিনিট লাগবে। এই দ্বীপে যাওয়ার পথে আপনি নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। চিকন চিকন নদী দিয়ে যেতে বহু সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি পাখির কল কাকলি শুনতে পারবেন। 


বাংলদেশ সুন্দরবনের মত এখানে রয়েছে চিকন চিকন নদী যার পাশে রয়েছে বিভিন্ন গাছপালা। একসময় চর কুকরি মুকরি তে মানুষ খুব বেশি একটা থাকতো না কিন্ত বর্তমানে এখানে রয়েছে অনেক জন বসতি। তাছাড়া বিভিন্ন রিসোর্ট শহ বড় বড় কয়েকটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। 


বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি পর্যটন স্পট। Two Amazing Tourist Spot in BD.
চিত্রঃ তারুয়া সমুদ্র সৈকত

এই দ্বীপে আপনি গেলে আসতেই মন চাইবে না।  একান্ত কিছুটা সময় কাটাতে এবং মন রিফ্রেশ করতে চাইলে চলে আসতে পারেন এই দ্বীপে। নদীর পাশ ঘেঁষা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট চিত্রা হরিণ সহ কন নান্দনিক জায়গা। 


বর্তমানে এই দ্বীপে বহু নামি দামি মানুষ আসা শুরু করে দিয়েছে। ব্যস্ততার মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে এবং প্রকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চর কুকরি মুকরির জুরি নেই। 



সময় নিয়ে আপনিও চলে আসুন কারণ এখানে আসলে আপনি ভাবতেও পারবেন না এই সৈকতটি কতটা সৌন্দর্যে ঘেরা। বাংলাদেশের কোথাও এমন সৌন্দর্য পাবেন না যা তারুয়া সমুদ্র সৈকতে রয়েছে।  


বাংলাদেশের তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি পর্যটন স্পট আমার কাছে সবচাইতে সেরা। আপনি যদি এখানে আসেন তাহলে বুঝতে পারবেন এখানকার পরিবেশ আপনার জন্য কতটা মানানসই। 


প্রচণ্ড গরমে কিংবা তীব্র শীতে কার জন্য সবচাইতে ভালো পরিবেশ থাকে। আপনি যদি কখনো ভ্রমণে যান তাহলে এই পরিবেশ ও আবহাওয়া আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর হবে ।তাছাড়া নিরিবিরি ঠান্ডা আবহাওয়ায় আপনি ফ্যামিলি সহ নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। 


তবে ভ্রমণে যাওয়ার আগে কিছু সতর্কতাঃ মানা জরুরী আপনি যেখানে ভ্রমণে চান না কেন অনেক সতর্কতাঃ মানা উচিত। বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত চরকুকরিমুকরি স্পট স্বর্গীয় সৌন্দর্য তাই আপনি এখানে অবশ্যই সময় পেলে আসবেন।


তারুয়া সমুদ্র সৈকত ও চর কুকরি মুকরি ভ্রমণ এর গাইডলাইন দেখুন

>শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্পট তারুয়া সমুদ্র সৈকতে ভ্রমন